সর্বেশেষ
ToT for School & College Teachers প্রোগ্রামের প্রধান অতিথি খুলনার পুলিশ কমিশনার গণঅভ্যুত্থানের সুফল ধরে রাখতে যুব সমাজকে দায়িত্ব নিতে হবে : এ্যাড. মোয়াজ্জেম হোসেন খুলনার সমাবেশে মিছিল নিয়ে পিরোজপুর -নাজিরপুরের বিএনপি, ছাত্র-যুবদলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নতুন অ্যাপ উদ্বোধন, রয়েছে ব্যক্তিগত রিপোর্ট সংরক্ষণ খুলনার যোগীপোলে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি সমাবেশ শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. ওবায়েদুল্লাহ মৃত্যুবরণ করেছেন ক্লিন ইমেজের আওয়ামী লীগ করা ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই সাভারে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামী গ্রেফতার আশুলিয়ায় অবৈধ গ্যাস সংযোগের কারণে বৈধ গ্রাহকদের ভোগান্তি ডিবি'র অভিযানে পিস্তলসহ গ্রেফতার ১
Home / বিনোদন / অণুগল্পঃ তিন শহর

অণুগল্পঃ তিন শহর

ফ্রাঙ্কফুর্ট। জার্মানী।

ম্যাসেঞ্জারে বন্ধুর ম্যাসেজ। আর এক মহাদেশ পার হয়ে আসতেই হ্যান্ডসেট স্ক্রীণে মৃদু কাঁপন অনুভব করে দূরের বন্ধু। মৃদু হাসি নিয়ে বিছানায় পাশ ফিরে আরাম অনুভব করে সে। ভালো লাগাটুকুও চোখ বন্ধ করে উপভোগ করে।

স্ক্রীণে বন্ধুর মুখ।
‘পারুর সাথে একবার কথা বলতে চাই। আমার ফোনই ধরছে না সে। তোর বুবুকে বল না..।’

সময় যেন থমকে যায়। নিঃশ্বাসগুলো বিশ্বাসের ওপার থেকে এপারে আসতে বাঁধা পায়। সমস্যার গভীরে চিন্তা-ভাবনাকে ঠাঁই দেবার আগেই বেদনারা ঘিরে ধরে দূরের বন্ধুকে। সে মোবাইলের দর্পণে কাছের বন্ধুর ছবির দিকে তাকিয়ে থাকে। উপায় খোঁজে।

 

মধ্যরাত। পারুর শহর।
একা এক প্রিয়দর্শিণী ঘুমন্ত ওর নিজ শহরের নিমগ্নতা, যোগীর গভীর ধ্যানমগ্নতায় অনুভব করছে। ফ্ল্যাট লাগোয়া ইউক্যালিপটাস গাছের পাতার ফাঁক গলে নেমে আসা চাঁদের আলোয়, ওর দীর্ঘ এলোচুল কেমন মায়াবী! নিঃশ্বাস রুদ্ধ হয়ে আসে.. দর্শকের বুকের গভীরে উষ্ণ রক্তের তান্ডব নৃত্য অনুভব করায়।

কালচে আগুন!
অহর্নিশি পোড়ায়। কাছে টানে। এমনই আগুন।

কি এক রহস্যময়, গোপন আবেশে পারুর অধর কোণে ফুটে ওঠা মৃদু হাসি মিলিয়ে যাওয়ার আগেই, হ্যান্ডসেটে মৃদু কম্পন।

‘পারু! ফোন ধর… একবার।’

এতটুকুই কথা। কত ব্যথা। কথার ভিতরেও কতটা যে না বলা কথা রয়েই গেল! রেখে গেল কিছু একটা। অনুভবে নাকি কল্পনায়?
বাস্তবে নয় কি? কেন?

পারুর হাসিই পারুর কান্না। সেই কান্না ধীরে ধীরে মৃদু হাসির কম্পনে চোখ স্পর্শ করার আগেই, মধ্যরাতের এক রহস্যময়ী অপ্সরী, নিজের শহরে বসে ভাবে-
‘ওকে যদি আমি ভালোই না বাসি, তবে ওর কষ্ট অনুভব করে, আমারও কষ্ট পাবার কোনো অধিকার নাই।’

রুপালী তরল চাঁদের প্রবল বর্ষণে ভিজে যেতে থাকে পারু…

 

মধ্যরাত। কাছের বন্ধুর নিজের শহর।
টপ ফ্লোরে নিজের ‘সাময়িক বন্দীশালায়’ বসে এই মহানগরের ভিন্ন এক রুপ দেখছে সে। আলোয় ঝলমলে নগরীর নিচেই কতটা অন্ধকার। অনুভূতিতে খোকলা। বিশাল এক অজগরের মত প্রকান্ড হা করে থেকে, সকাল-সন্ধ্যা ওর বুকে বিচরণ করা যান্ত্রিক মানুষগুলোর অনুভূতিকে খেতে থাকে। সেই আলো-অন্ধকারের দিকে নির্ণিমেষ চেয়ে থেকে সে ভাবে-
‘পারু ম্যাসেজের উত্তর দিলো না!’

হৃদয়ের গভীরে কিছু একটা পুড়ছে। পোড়া গন্ধ পায় সে। কাছের বন্ধুর ভিতরে কোথায় যেন সহস্র জ্বলন্ত মোমবাতি গলে গলে পড়ছে। পুড়ছে। পোড়াচ্ছে!!

‘ওহ! ভালোবাসায় এত কষ্ট কেন?‘
নিজের পারুর কথা ভেবে ভেবে সে উদাস হয়।

একটা আক্ষেপ সারা জীবন থেকেই গেলো। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র না পাওয়ার বেদনাগুলোর এলোমেলো পথ চলার নামই কি জীবন নয়?

এব্যাপারে, কারো কারো ক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকতেও পারে। তবে অহংকার যাদের জীবনে অলংকারের মত জড়িয়ে থাকে, তাদের জীবনের বেশীরভাগ পথই এমন এলোমেলো চলতে হয়।

 

গল্পকার: মো: আল মামুন খান
গণমাধ্যমকর্মী

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ই-মেইল প্রকাশ করা হবে না। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা আছে *

*