
ইমদাদুল হক: ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঢাকার সাভারে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত রাজমিস্ত্রী মো. সোহেল মিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারী) বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ।
গ্রেফতারকৃত তিন ছিনতাইকারী হলো- ঢাকার ধামরাই উপজেলার সুয়াপুর রাজনগর এলাকার কুদ্দুস শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২৩), বরগুনা জেলার সদর উপজেলার বদুঠাকুরানী কোটবাড়ি এলাকার মো. দুলাল গাজীর ছেলে মাে. তুহিন (২২) এবং মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার শেওরাইল এলাকার মো. নুরুল ইসলামের ছেলে সানি শুভ(২০)। আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃতরা।
এব্যাপারে, ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জানান, তিন আসামী রবিবার দুপুরে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেছে। আদালত তিন আসামীকে জেলহাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ প্রদান করেন।
এর আগে, শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) দিনব্যাপী ঢাকা ও মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুইটি ছুরি ও মাদক উদ্ধার করা হয়।
ডিবি পুলিশের ওসি জানান, গ্রেফতার প্রত্যকেই ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে তারা সাভার বাসস্ট্যান্ড ও এর আশপাশের এলাকায় ছিনতাই করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) ভোরে সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের রাঙ্গাবন নার্সারি এলাকায় তিনজন অবস্থান করছিল। পরে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নিহত সোহেল তার স্ত্রী মুন্নী খাতুন (২৪) ও তাদের দেড় বছর বয়সী শিশুকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি রংপুর থেকে বাসযোগে এসে এখানে নামেন। এসময় তাঁদের একাকী পেয়ে মুঠোফোন ও টাকাপয়সা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন করেন ওই তিনজন।
তিনি আরও বলেন, ছিনতাইকারীরা এসময় ধারালো ছুরির ভয় দেখিয়ে নিহত সোহেলের স্ত্রী মুন্নির হাতে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এসময় ছিনিয়ে নেয়া টাকা ফেরত পেতে ছিনতাইকারীদের সাথে হাতাহাতিতে লিপ্ত হন সোহেল। পরে তার স্ত্রী শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে ভয়ে সেখান থেকে দৌড়ে গিয়ে তাদের প্রতিবেশীদের ডাকতে যান এবং আনুমানিক ২৫ মিনিট পর ফিরে এসে দেখেন তার স্বামী সোহেল রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পরে আছে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত সোহেলকে পার্শ্ববর্তী এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় আটককৃতদের বিরুদ্ধে হত্যা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান ডিবি’র ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ।