
সায়েদুর রহমান রাসেল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের কালিপুরা গ্রামের বাসিন্দা জাহার মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। গত ৮ বছর ধরে গ্রাম পুলিশের দায়িত্ব পালন করে আসছেন বলে জানা যায়।
সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি সহ গরু চুরি, মাদক সেবন, ইভটিজিং, ব্ল্যাকমেইলসহ একাধিক অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এর বরাবর স্থানিয় মেম্বার মুক্তার হোসেনের নেতৃত্বে এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর আলমের বিচারের দাবীতে স্থানীয় ডাকবাংলো সড়কে মানববন্ধনের ঘটনাও ঘটেছে।
স্থানীয় সংবাদকর্মীরা গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা জানতে ঘটনাস্থলে যান। গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে যে মহিলার সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠছে তার নাম লাভলী আক্তার ও তিনি গ্রাম পুলিশের সম্পর্কে চাচাতো ভাইয়ের বউ। লাভলী আক্তার জানান, আমাকে আর জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা। বরং জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কথা বলতে আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এক তো আমার নামে নিন্দা রটায় আবার হুমকিও দিতেছে।
কালীপুরা প্রাইমারি স্কুলের সাবেক সভাপতি আব্দুল করিম জানান, কয়েকদিন আগে মহিলা গঠিত বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তাছাড়া গরুচুরি,মাদক বিক্রি, চাদাবাজী এসব অভিযোগ অসত্য। তাকে কখনো জোর জবরদস্তি করে টাকা আদায় করতে দেখেনি।
সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেম্বার কামাল হোসেন বলেন, গ্রামপুলিশ জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠছে তা আগে কখনো শুনিনি। তার মতো একটা ভাল ছেলেকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
কালিপুরা গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধ আনা অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে যে বিচার করবে আমি তা মেনে নেবো। কিন্তু আমার নিরাপত্তা এখন কে দেবে? আমি কার কাছে বিচার চাইবো?
গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গির আলম আরো জানান, গত ১৭ আগষ্ট রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনায় তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। ঘটনার দিন রাতে তিনি ছিদ্দিক মিয়া নামের এক ব্যক্তির ফোন পেয়ে বাড়িতে আসার পথে এলাকার কয়েকজন মিলে শিকল দিয়ে বেঁধে টানা হেচড়া করে ওই মহিলার সাথে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আটকে রাখেন ও বিচার সালিশি হয়েছে। ঘটনার দিন রাতে আমি ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়াডের সদস্য জসিম উদ্দিন রাত ১০-৩০ মিনিটের সময় আমাকে ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ডিউটিতে নিয়োজিত করে যান এবং আমি ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদে ডিউটিরত অবস্থায় ছিলাম। উল্লেখিত ঘটনার সময় মহিলার স্বামী মোঃ আহাদ মিয়া বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন। এসব ঘটনায় মহিলার ভাসুররা জড়িত। আমি এই বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে চেয়েছিলাম। পরে আমাদের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে এটির সমাধান করা হয়েছিল।
বিভিন্ন সময় পুলিশ আসামী গ্রেফতার করতে আসলে আসামীদের সতর্ক না করার কারনে তার বিরুদ্ধে এই ধরনের কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলছে বলে জানায় জাহাঙ্গীর।
ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মুছা জানান, জাহাঙ্গীরের নারী কেলেঙ্কারির ঘটনাটি সামাজিকভাবে সমাধান করা হয়েছে।