
ডেস্ক নিউজ: সম্ভবত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসই একমাত্র এয়ারলাইনস যাদের কেবিন ক্রুদের উপর ভরসা করে, আস্হা রেখে যেকোন সন্তান প্রায়শই তাদের ৮০ বয়সোর্ধ বাবা, মা এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপের উদ্দেশ্যে তুলে দেন নিশ্চিন্তে।
গত ১লা ডিসেম্বর, ২০২৩ লন্ডনগামী ফ্লাইটে ঘটে তেমনই ঘটনা। সিলেট থেকে উড্ডয়নের ঘন্টা খানেক পরেই ইকোনমি ক্লাসের একজন যাত্রী যার বয়স ৮৪ বলে জানা যায়, অসুস্থ বোধ করলে তাঁর শ্বাস কষ্টের কথা জানান কর্মরত ক্রুকে। তৎক্ষনাৎ কর্তব্যরত ক্রু ছুটে যান অক্সিমিটার আনতে। বিষয়টি তিনি জানান তার কেবিন চীফকে। অক্সিজেন স্যাচুরেসান ৮৪/৮৫ পেয়ে ক্রুরা তাঁকে অক্সিজেন দেন।
কিছুটা অবস্থার উন্নতি হলে পাইলট ইন কমান্ড ( PIC) এর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে তাঁকে উন্নততর আসনে (প্রিমিয়াম ইকোনমি) নিয়ে আসেন ক্রুরা।
পরবর্তীতে যাত্রীর আবার শ্বাস কষ্ট হলে অক্সিজেন দেয়া হয়। ইতোমধ্যেই যাত্রীদের উদ্দেশ্যে চীফ পার্সার ডাক্তারের খোঁজে ঘোষনা দেন এবং ডাক্তারও পাওয়া যায়। এভাবে ডাক্তারের পরামর্শক্রমে এবং নিয়ম অনুযায়ী PIC সাথে আলোচনা সাপেক্ষে উড়োজাহাজে সংরক্ষিত Emergency Medical Box খুলে সকল সম্ভাব্য চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এভাবে প্রায় ৯-১০ ঘন্টা ৪০/৪১ হাজার ফুট উপরে মাঝআকাশে নিয়মিত শুশ্রূষা দিয়ে, উড়োজাহাজে সংরক্ষিত ৬টি অক্সিজেন বোতল ব্যবহার করে যখন দেখা গেল সংশ্লিষ্ট যাত্রীর অক্সিজেন স্যাচুরেসন কমে যাচ্ছে তখন PIC বুলগেরিয়ার সোফিয়ায় জরুরি অবতরন করার সিদ্ধান্ত নেন।
উল্লেখ্য যে, অসুস্থ সেই ৮৪ বয়সোর্ধ যাত্রী উড়োজাহাজে ছিলেন একান্তই স্বজনহীন,তাঁর রোগের ইতিহাসও চৌকস ক্রুদের উদঘাটন করতে হয়েছে যাত্রীর ব্যাগ থেকে প্রেস্ক্রিপশান ও ঔষধ পত্র অনুসন্ধান করে।
প্রসঙ্গত আরও উল্লেখ্য,বিমান সিলেট স্টেশন ম্যানেজার এর কাছ থেকে প্রাপ্ত সুত্রে জানা যায়, সেই রোগি এখন সুস্থ আছেন। তার রিলেটিভরা বুলগেরিয়া থেকে তাকে দুই একদিনের মধ্যে লন্ডনে নিয়ে যাবেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সুদক্ষ, সুবিবেচক পাইলটের সিদ্ধান্ত এবং কেবিন ক্রু দলের আন্তরিক সেবায় বেঁচে যায় একজন যাত্রী, বিমান জরুরি অবতরন করে বুলগেরিয়ার সোফিয়ায়। তাই বলতেই হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সত্যিই YOUR HOME IN THE SKY.