
এমডি আল মাসুম খান: সরকারি, বেসরকারি তফসিলভুক্ত ব্যাংক থেকে নামসর্বস্ব কাগজি রড সিমেন্টের দোকান দেখিয়ে ক্যাশ ক্রেডিট (সি সি) লোনের জমজমাট ব্যবসা পরিচালনা করছে খুলনার বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা।
অনুসন্ধানে এসেছে, খুলনার কতিপয় জমি ব্যবসায়ীরা দীর্ঘ বছর ধরে রড, সিমেন্টের দোকান দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা সি সি লোন নিচ্ছেন বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি ব্যাংক থেকে। অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, একই ব্যক্তি একই দোকানকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামের আর্থিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে এই সি সি লোন নিচ্ছেন। কখনো বা নিজের নামে, স্ত্রীর নামে প্রতিষ্ঠান, সন্তানের নামের কাগজি প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে অনৈতিক ভাবে ব্যাংক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দীর্ঘ মেয়াদী এই লোন গ্রহণ করছেন।
আরও জানা যায়, সি সি লোন গ্রহণ করার আগের সময়ে কাগজি রড, সিমেন্টের দোকান গুলোতে লোন অফিসারদের অনুসন্ধান রিপোর্টের সময়ে কিছু সিমেন্ট ও রড এনে কয়েক দিনের জন্য দোকান পরিচালিত হয়। লোন পাস হওয়ার পরে দোকানের রড ও সিমেন্ট অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয় অথবা নিজেদের বাড়ি – ঘরে ব্যবহার করা হয়।
ক্যাশ ক্রেডিট লোন গ্রহণ করা রড-সিমেন্টের দোকান গুলোতে গিয়ে দেখা যায় শাটারগুলো দীর্ঘ মেয়াদী তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে।
উল্লেখ্য, ব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দিলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রেখে নতুন আইন পাস করেছে সরকার। গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে পেমেন্ট অ্যান্ড সেটলম্যান্ট সিস্টেমস আইন, ২০২১ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
এই বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের খুলনা কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক শেখ শাহরিয়ার রহমানের সাথে। তিনি জানান, ক্যাশ ক্রেডিট প্রোগ্রামটি ব্যাংকিং সেক্টরে খুবই জনপ্রিয় একটি লোন কার্যক্রম বলে বিবেচিত হয়। তিনি আরও বলেন, কোন ব্যাংক অথবা সি সি লোন গ্রহীতা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আইন অমান্য করে অনিয়ম সংগঠিত করলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
একই সাথে তিনি জানান, অনিয়ম এর সাথে জড়িত নির্দিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তাদের কাছে অভিযোগ করতে হবে। কারন প্রচলিত আইনে এই সকল অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে অতীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া ও প্রচলিত আইনে মামলা করার পরে মহামান্য আদালত অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড প্রদান করেছে।
খুলনা,
০৭.০৭.২০২৪